পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের সকল নিয়ম

পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের সকল নিয়ম ধাপে ধাপে জানুন এবং আপনার মেয়াদোত্তীর্ণ বা হারানো পাসপোর্ট নবায়নের সম্পূর্ণ কাজ সহজ করুন। এটি একটি কার্যকর দিক যা আপনাকে অনলাইন আবেদন ফি জমা দেওয়া বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান ও আবেদনের অবস্থা ট্র্যাকিং এর পদ্ধতি

পাসপোর্ট-রি-ইস্যু-ফরম-পূরণের-সকল-নিয়ম
সম্পর্কে ধারণা দেবে। MRP থেকে  E-Passport এ আপগ্রেড করবেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কী কী প্রস্তুত রাখতে হবে তার নিয়ম এই প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই সহজ ধাপ অনুসরণ করে আপনার পাসপোর্ট রি ইস্যু প্রক্রিয়া দ্রুত ও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করুন।

পেজ সূচিপত্রঃ পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের সকল নিয়ম

পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের সকল নিয়ম

পাসপোর্ট রি ইস্যুর প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো সঠিক ও নির্ভুলভাবে ফর্ম পূরণ করা। নির্ভুল তথ্য প্রদানের মাধ্যমেই আবেদনকারী প্রমাণ করেন যে তিনি পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের সকল নিয়ম সম্পর্কে অবগত। এই ফর্মটি মূলত আপনার পুরোনো পাসপোর্টের একটি আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়াকে উপস্থাপন করে। ফর্ম পূরণের সময় ব্যক্তির নাম জন্মতারিখ পিতামাতার নাম এবং বর্তমান ঠিকানার মতো মৌলিক তথ্যগুলো অবশ্যই পূর্বের পাসপোর্টের সাথে হুবহু মেলাতে হবে। যদি এই তথ্যের মধ্যে কোনো প্রকার অসামঞ্জস্য থাকে তবে এর স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ডকুমেন্ট যেমন

এফিডেভিট বা সংশোধনী সনদ সাথে প্রস্তুত রাখা বাধ্যতামূলক। এই ধরনের জটিলতা এড়ানোর জন্যই সঠিক নিয়ম মেনে ফর্ম পূরণ করা প্রয়োজন। অনেকেই ঠিকানার অংশে ভুল করেন বিশেষত স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানার মধ্যে পার্থক্য তৈরি হলে। আবেদনকারীকে তার বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে ইউটিলিটি বিল বা ভাড়া চুক্তির নথি সংযুক্ত করতে হতে পারে। পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের  নিয়ম অনুযায়ী যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে একটি কার্যকর ফোন নম্বর এবং একটি সক্রিয় ইমেইল আইডি উল্লেখ করা অত্যন্ত জরুরি। ফর্ম পূরণের সময় আবেদনকারীকে তার পেশাগত তথ্য খুব 

স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হয়। যদি কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকেন তবে প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা এবং তার পদবি উল্লেখ করা দরকার। এই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অফিসের পরিচয়পত্র বা প্রত্যয়নপত্র প্রস্তুত রাখা আবশ্যক। চূড়ান্তভাবে ফর্মটি অনলাইনে সাবমিট করার আগে প্রতিটি ঘর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দুবার চেক করে নেওয়া উচিত। এই যাচাইকরণ নিশ্চিত করে যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘর শূন্য নেই বা কোনো বানান ভুল হয়নি। এই সতর্কতা অবলম্বন করলে আপনার আবেদনপত্র দ্রুত প্রক্রিয়াজাত হবে এবং কোনো প্রকার ত্রুটির কারণে তা বাতিল হবে না।

পাসপোর্ট রি ইস্যুর জন্য অনলাইনে আবেদন করুন

আধুনিক পাসপোর্ট রি ইস্যু প্রক্রিয়াটি শুরু হয় মূলত পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অফিসিয়াল পোর্টালে অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে। অনলাইন আবেদন সুবিধাটি প্রক্রিয়াটিকে অনেক গতিশীল ও স্বচ্ছ করেছে। পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের সকল নিয়ম মেনে চলার জন্য এটি একটি আধুনিক প্ল্যাটফর্ম। অনলাইনে আবেদন শুরু করতে হলে প্রথমে আবেদনকারীকে একটি নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে বা পূর্বের অ্যাকাউন্ট থাকলে তাতে লগইন করতে হবে। এরপর অ্যাপ্লিকেশন ফর রি-ইস্যু অপশনটি সাবধানে নির্বাচন করতে হয়। এই ধাপে পূর্ববর্তী পাসপোর্টের নম্বরটি ইনপুট দেওয়া আবশ্যক। অনলাইন 

পাসপোর্ট-রি-ইস্যু-ফরম-পূরণের-সকল-নিয়ম

ফর্মটি অনেকগুলো ধাপে বিভক্ত থাকে যেখানে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন বৈবাহিক অবস্থা জাতীয়তা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়। প্রতিটি ধাপ পার হওয়ার সময় সেভ বা নেক্সট বাটনে ক্লিক করে তথ্য সংরক্ষণ করা উচিত যাতে কোনো কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও তথ্য হারিয়ে না যায়। আবেদনকারীকে তার পাসপোর্টের ধরণ অর্থাৎ সাধারণ জরুরি বা অতি জরুরি এই তিনটির মধ্যে একটি বেছে নিতে হয়। দ্রুততম সময়ে পাসপোর্ট পেতে হলে অতি জরুরি বিকল্পটি নির্বাচন করা যায় তবে এর 

জন্য ফি এর পরিমাণ বেশি হয়। এই নির্বাচনের উপরই নির্ভর করে আপনার পাসপোর্ট কতদিনে হাতে আসবে। ফর্মটি সম্পূর্ণ পূরণ হওয়ার পর সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনাকে ফি প্রদানের ধাপে নিয়ে যায়। ফি প্রদানের আগে আবেদনপত্রের একটি প্রিভিউ দেখা যায় যা চূড়ান্ত যাচাইয়ের জন্য খুবই উপযোগী। সফলভাবে আবেদন সাবমিট করার পর আপনাকে একটি এনরোলমেন্ট আইডি এবং পিডিএফ ফর্ম ডাউনলোড করতে দেওয়া হবে।

পাসপোর্ট রি ইস্যুর জন্য দরকারি কাগজপত্র তৈরি রাখুন

অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন হওয়ার পর অফিসে জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের একটি তালিকা প্রস্তুত করা জরুরি। সঠিক কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের সকল নিয়ম এর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই নথিগুলোই আপনার দেওয়া তথ্যের সত্যতা প্রমাণ করে। প্রথমত আপনার পুরোনো পাসপোর্টের মূলকপি এবং তার প্রথম পাঁচ পাতার ফটোকপি তৈরি রাখতে হবে। যদি এটি ই-পাসপোর্ট হয় তবে তার তথ্য পাতার কপি যথেষ্ট। এছাড়া সদ্য তোলা ছবি যা অনলাইন ফরমেট 

এর সাথে মেলে তা অবশ্যই দরকার। জাতীয় পরিচয়পত্রের মূলকপি এবং ফটোকপি অবশ্যই সাথে রাখতে হবে। যদি আবেদনকারীর বয়স কম হয় তবে জন্ম নিবন্ধন সনদ বা অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করতে হয়। ফটোকপিগুলো যেন স্পষ্ট ও ঝকঝকে হয় তা নিশ্চিত করা দরকার। ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে বিদ্যুৎ বিল গ্যাস বিল বা পানির বিলের ফটোকপি প্রস্তুত রাখা উচিত যা বর্তমান ঠিকানার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই বিলগুলো সাধারণত তিন মাসের বেশি পুরোনো হওয়া উচিত নয়। কিছু 

ক্ষেত্রে ব্যাংক স্টেটমেন্টও ঠিকানা প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে। যদি আপনি কোনো সংশোধনীর জন্য আবেদন করেন যেমন নাম বা জন্মতারিখের পরিবর্তন তবে সেই সংশোধনের সপক্ষে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক এফিডেভিট বা গেজেট নোটিফিকেশন অবশ্যই সংযুক্ত করতে হবে। এই সমস্ত নথি একটি ফাইলে গুছিয়ে আবেদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত ও সহজ করে তোলে।

পাসপোর্ট রি ইস্যুর জন্য ফি জমা দিন

পাসপোর্ট রি ইস্যুর আবেদন প্রক্রিয়ার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও বাধ্যতামূলক ধাপ হলো সঠিক সরকারি ফি জমা দেওয়া। ফি প্রদান করা ছাড়া আপনার আবেদন কখনোই গৃহীত হবে না এবং পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের নিয়ম এর এই আর্থিক বাধ্যবাধকতা প্রতিটি আবেদনকারীর জন্য অবশ্য পালনীয়। এই ফি এর পরিমাণ নির্ভর করে আপনি কী ধরনের পরিষেবা নিচ্ছেন তার উপর সাধারণ জরুরি বা অতি জরুরি। ফি জমা দেওয়ার জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে অফলাইন বা অনলাইন যেকোনো পদ্ধতি বেছে নেওয়া যায়। সোনালী ব্যাংক বা নির্দিষ্ট বাণিজ্যিক 

ব্যাংকগুলোর শাখায় আপনি নগদ অর্থ জমা দিয়ে চালান সংগ্রহ করতে পারেন। ব্যাংক কাউন্টারে ফি জমা দেওয়ার সময় অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে যেন চালানে আপনার আবেদনপত্রের সাথে সম্পর্কিত সঠিক তথ্য যেমন পাসপোর্টের ধরন এবং মেয়াদ উল্লেখ থাকে। বর্তমানে অনলাইন পেমেন্ট পদ্ধতি অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যেখানে মোবাইল ব্যাংকিং ওয়ালেট বা ডেবিট ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সহজেই ফি পরিশোধ করা যায়। অনলাইনে ফি জমা দেওয়ার সুবিধা হলো আপনি তাৎক্ষণিকভাবে একটি ই-রশিদ বা পেমেন্ট কনফার্মেশন স্লিপ পেয়ে যান যা আপনার সময় বাঁচায়। এই 

ডিজিটাল রসিদটি প্রিন্ট করে আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত করা পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের  নিয়ম এর আধুনিক পদ্ধতি। ফি এর পরিমাণ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। আপনি যদি অতি জরুরি পাসপোর্ট চান তবে তার জন্য সাধারণ পাসপোর্টের চেয়ে অনেক বেশি ফি দিতে হবে। ফি এর সঠিক পরিমাণ পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট বা অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তিতে দেখে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। ভুল ফি জমা দিলে আপনার আবেদন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের জটিলতা তৈরি 

হতে পারে এবং এতে মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। ফি জমা দেওয়ার পর ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত চালানের মূলকপি এবং একটি ফটোকপি যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করুন। এই চালানটি হলো আপনার আবেদনপত্রের একটি অপরিহার্য অংশ যা প্রমাণ করে যে আপনি সরকারি পাওনা পরিশোধ করেছেন। চালান ছাড়া আবেদন জমা দেওয়া সম্ভব নয় এবং এটি পাসপোর্ট সংগ্রহ করার সময়ও প্রয়োজন হতে পারে। এই ধাপটি সঠিক ও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন হওয়া আপনার পুরো প্রক্রিয়ার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

পাসপোর্ট এর জন্য অফিসে গিয়ে ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিন

ফি পরিশোধ এবং অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন হওয়ার পর আবেদনকারীকে তার বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের জন্য নির্ধারিত দিনে পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হতে হয়। এই ধাপটি হলো আবেদন প্রক্রিয়ার শারীরিক উপস্থিতি যেখানে রি ইস্যু ফরম পূরণের সকল নিয়ম অনুযায়ী আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই করা হয়। এই সময় আবেদনকারীর শারীরিক উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। পাসপোর্ট অফিসে আপনাকে অবশ্যই আপনার সকল প্রয়োজনীয় নথিপত্র যেমন অনলাইন আবেদনের প্রিন্ট কপি ফি জমার রশিদ এবং সকল মূল কাগজপত্র সাথে নিয়ে যেতে হবে। অফিসে গিয়ে প্রথমে আপনার 

ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন কাউন্টারে যেতে হবে যেখানে একজন কর্মকর্তা আপনার সকল নথি পরীক্ষা করবেন। নথিতে কোনো প্রকার সমস্যা থাকলে এই পর্যায়ে তা সংশোধন করার সুযোগ দেওয়া হতে পারে। ডকুমেন্ট যাচাই পর্ব সফলভাবে শেষ হওয়ার পর আবেদনকারীকে ছবি এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট কক্ষে পাঠানো হয়। সেখানে হাই রেজোলিউশনের একটি ডিজিটাল ছবি তোলা হয় যা আপনার নতুন পাসপোর্টে ব্যবহৃত হবে। এই ছবিটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে তোলা হয় 

তাই সাধারণ পোশাকে এবং স্বাভাবিক ভঙ্গিতে ছবি তোলার জন্য প্রস্তুত থাকা দরকার। ছবি তোলার পরপরই আপনার বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। এটি দশ আঙুলের ছাপ হতে পারে যা ইলেকট্রনিক চিপে সংরক্ষিত থাকে। একই সাথে আপনার চোখের আইরিশ স্ক্যানও নেওয়া হতে পারে যা আপনার ব্যক্তিগত পরিচয়ের একটি অত্যন্ত সুরক্ষিত ডিজিটাল প্রমাণ। এই তথ্যগুলোই আপনার ই-পাসপোর্টের মূল নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য।

পাসপোর্ট-রি-ইস্যু-ফরম-পূরণের-সকল-নিয়ম
এই বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের ধাপটি নিরাপত্তার কারণে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং এখানে কোনো প্রকার প্রতিনিধি গ্রহণযোগ্য নয়। এটি নিশ্চিত করে যে পাসপোর্টটি সঠিক ব্যক্তির হাতে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন শান্ত থাকা এবং অপারেটরের নির্দেশাবলী মনোযোগ সহকারে অনুসরণ করা উচিত। সফলভাবে ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়া হলে আপনার আবেদন প্রক্রিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ পার করে যায়।

পাসপোর্ট এর জন্য অনলাইনে আবেদন ট্র্যাক করুন

আবেদনপত্র এবং বায়োমেট্রিক তথ্য সফলভাবে জমা দেওয়ার পর আবেদনকারীকে আর অফিসে যেতে হয় না বরং ঘরে বসেই তারা তাদের আবেদনের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অনলাইন ট্র্যাকিং ব্যবস্থা ব্যবহার করে এই কাজটি করা যায় যা পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের নিয়ম এর একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। নিয়মিত ট্র্যাকিং আপনাকে আপনার পাসপোর্টের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেবে। আবেদন ট্র্যাকিং করার জন্য আপনার ডেলিভারি স্লিপ বা অনলাইন আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপিতে থাকা অ্যাপ্লিকেশন আইডি বা এনরোলমেন্ট নম্বরটি ব্যবহার করতে হয়। 

এই নম্বরটি পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট ট্র্যাকিং ফর্মে ইনপুট দিলেই আপনার আবেদনের বর্তমান অবস্থা স্ক্রিনে প্রদর্শিত হয়। এই প্রক্রিয়াটি আবেদনকারীকে অনর্থক উদ্বেগ থেকে মুক্তি দেয়। ট্র্যাকিং সিস্টেমে আপনার আবেদনের অবস্থা বিভিন্ন ধাপে দেখানো হয় যেমন পেন্ডিং ফর এপিএস পুলিশ ভেরিফিকেশন ইন প্রগ্রেস পাসপোর্ট প্রিন্টিং ইন প্রগ্রেস এবং পাসপোর্ট রেডি ফর ডেলিভারি। এই স্ট্যাটাসগুলো দেখে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার পাসপোর্টটি বর্তমানে কোন পর্যায়ে আছে এবং কখন এটি হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি আপনার আবেদনের অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে পেন্ডিং ফর 

পুলিশ ভেরিফিকেশন এ আটকে থাকে তবে আপনি সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টের কার্যালয়ে বা পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রক্রিয়াটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন হয়। ট্র্যাকিং না করলে আপনি গুরুত্বপূর্ণ কোনো আপডেট মিস করে যেতে পারেন। নিয়মিত আবেদন ট্র্যাক করার সুবিধা হলো আপনি পাসপোর্ট সংগ্রহের সঠিক সময় জানতে পারেন এবং পূর্ব প্রস্তুতি নিতে পারেন। এই আধুনিক ট্র্যাকিং ব্যবস্থা পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকে আরও ব্যবহারকারী-বান্ধব করে তুলেছে এবং সময়মতো পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে সাহায্য করে। এই ট্র্যাকিং আপনার অপেক্ষা এবং দুশ্চিন্তাকে কমিয়ে দেয়।

পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন

অনলাইন ট্র্যাকিং এ যখন আপনার আবেদনের অবস্থা 'পাসপোর্ট রেডি ফর ডেলিভারি' দেখাবে তখন আপনি আপনার নতুন পাসপোর্টটি সংগ্রহ করার জন্য প্রস্তুত। এই ধাপটি আপনার রি ইস্যু প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত সফলতা এবং এটিও পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের নিয়ম এর একটি অংশ। পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য আপনাকে নির্ধারিত পাসপোর্ট অফিসে পুনরায় যেতে হবে। পাসপোর্ট সংগ্রহ করার জন্য অফিসে যাওয়ার সময় আপনাকে কিছু জরুরি নথি অবশ্যই সাথে নিয়ে যেতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে আপনার পুরোনো পাসপোর্টের মূল কপি ডেলিভারি স্লিপ বা টোকেন এবং ফি জমার মূল রশিদ। 

পুরোনো পাসপোর্ট ছাড়া নতুন পাসপোর্ট হাতে দেওয়া হয় না। পাসপোর্ট অফিসে আপনাকে ডেলিভারি কাউন্টারে যেতে হবে এবং সেখানে আপনার পুরোনো পাসপোর্টটি জমা দিতে হবে। কর্মকর্তারা আপনার পুরোনো পাসপোর্টটি যাচাই করবেন এবং এটি বাতিল করার জন্য এর উপর ছিদ্র বা ক্যান্সেলেশন স্ট্যাম্প মেরে দেবেন। এটি নিশ্চিত করে যে আপনি আপনার পুরোনো পাসপোর্টটি আর ব্যবহার করতে পারবেন না। নতুন পাসপোর্টটি হাতে পাওয়ার পর অবশ্যই এর প্রতিটি তথ্য খুব সতর্কতার সাথে পরীক্ষা 

করে নিতে হবে। আপনার নাম জন্মতারিখ ছবি এবং পাসপোর্টের মেয়াদ সব কিছু যেন নির্ভুলভাবে মুদ্রিত হয় তা নিশ্চিত করুন। কোনো প্রকার ভুল বা ত্রুটি থাকলে তা সাথে সাথে কাউন্টারের কর্মকর্তাকে অবহিত করা আবশ্যক। যদি আপনি সময়মতো পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে না পারেন তবে সাধারণত পাসপোর্ট অফিসগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আপনার পাসপোর্টটি ধরে রাখে। তবে অযথা দেরি না করে দ্রুত সংগ্রহ করা বুদ্ধিমানের কাজ। সফলভাবে নতুন পাসপোর্ট হাতে পাওয়া মানে আপনার আন্তর্জাতিক ভ্রমণের দরজা নতুন করে খুলে যাওয়া।

এমআরপি বা ই-পাসপোর্ট বেছে নিন 

পাসপোর্ট রি ইস্যুর আবেদন করার সময় আবেদনকারীকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত সিদ্ধান্ত নিতে হয় তা হলো আপনি মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) রাখবেন নাকি ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (E-Passport) এর জন্য আবেদন করবেন। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার ই-পাসপোর্টের উপর জোর দিচ্ছে যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখে। ই-পাসপোর্ট হলো একটি অত্যন্ত সুরক্ষিত পাসপোর্ট যাতে একটি মাইক্রোচিপ এমবেড করা থাকে। এই চিপের মধ্যে আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং আইরিশ স্ক্যান এনক্রিপ্ট করে রাখা হয়। ই-পাসপোর্ট জালিয়াতি প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং ইমিগ্রেশন 

প্রক্রিয়াকে অনেক দ্রুত করে তোলে। E-Passport হলো বর্তমান সময়ের সবচেয়ে নিরাপদ ডকুমেন্ট। MRP এর তুলনায় E-Passport এর ফি কিছুটা বেশি হতে পারে তবে এর নিরাপত্তা সুবিধা এবং আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অনেক উন্নত। E-Passport বেছে নেওয়া মানে আপনি বিশ্বের অত্যাধুনিক ভ্রমণ প্রযুক্তির সুবিধা নিচ্ছেন। রি ইস্যু ফরম পূরণের সকল নিয়ম এর অংশ হিসেবে আপনার পছন্দটি স্পষ্টভাবে নির্বাচন করা উচিত। অনলাইন আবেদন ফর্ম পূরণের সময় আপনাকে MRP বা E-

Passport এর বিকল্প নির্বাচন করতে বলা হবে। যদি আপনার পুরোনো পাসপোর্টটি MRP হয় তবে রি ইস্যুর সময় আপনি সহজেই E-Passport এ আপগ্রেড করতে পারবেন যা একটি অত্যন্ত ইতিবাচক পরিবর্তন। ভবিষ্যতের ভ্রমণের সুবিধার কথা বিবেচনা করে এবং ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে বেশিরভাগ আবেদনকারী এখন E-Passport বেছে নিচ্ছেন। এটি আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে আরও মসৃণ করবে এবং সীমান্ত পারাপারকে সহজ করে তুলবে।

পাসপোর্ট এর জন্য বয়স ও মেয়াদ দেখে আবেদন করুন

পাসপোর্ট রি ইস্যুর আবেদন করার আগে আপনার বর্তমান পাসপোর্টের অবশিষ্ট মেয়াদ এবং আবেদনকারীর বয়স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনার বিষয়। এই দুটি কারণ আপনার নতুন পাসপোর্টের মেয়াদ এবং কিছু বিশেষ নিয়মের উপর প্রভাব ফেলে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত ছয় মাস থাকা জরুরি। অনেক দেশই ছয় মাসের কম মেয়াদ আছে এমন পাসপোর্টধারীকে তাদের দেশে প্রবেশ করতে দেয় না। তাই মেয়াদ ছয় মাসের নিচে নেমে এলেই 

আপনার রি ইস্যুর জন্য আবেদন করা উচিত। ১৮ বছরের কম বয়সী এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী আবেদনকারীদের জন্য পাসপোর্টের মেয়াদ সাধারণত ৫ বছর হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্করা ৫ বছর বা ১০ বছরের যেকোনো একটি মেয়াদ বেছে নিতে পারেন। আপনার বয়স এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক মেয়াদ নির্বাচন করা পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের নিয়ম এর অন্তর্ভুক্ত। শিশুদের পাসপোর্টের ক্ষেত্রে বয়স প্রমাণ হিসেবে জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং তাদের পিতামাতার পাসপোর্টের কপি জমা দেওয়া 

আবশ্যক। অভিভাবকদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যেন সমস্ত তথ্যের সাথে সন্তানের তথ্যের কোনো অসামঞ্জস্য না থাকে। সঠিক সময় দেখে পর্যাপ্ত হাতে সময় নিয়ে আবেদন করা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি আপনাকে জরুরি পাসপোর্ট ফি এড়িয়ে চলতে এবং আপনার ভ্রমণের পরিকল্পনা নির্বিঘ্ন রাখতে সাহায্য করে। সময়মতো আবেদন করলে কোনো প্রকার তাড়াহুড়ো বা মানসিক চাপ থাকে না।

পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন ফর্ম ঠিকভাবে পূরণ করুন

পাসপোর্ট রি ইস্যুর আবেদন ফর্মটি হলো আপনার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ তাই এটি নির্ভুলভাবে পূরণ করা প্রক্রিয়াটির একটি সফল ভিত্তি। ফর্ম পূরণে সামান্যতম অসতর্কতা আপনার আবেদন প্রত্যাখ্যানের কারণ হতে পারে। এটি পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের নিয়ম এর সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ। ফর্ম পূরণের সময় আপনার নাম পিতার নাম মাতার নাম জন্মতারিখ এবং স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানার মতো মৌলিক তথ্যগুলো যেন পূর্বের পাসপোর্টের সাথে হুবহু মেলে তা নিশ্চিত করুন। বানানের একটি ছোট ভুলও বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। যদি কোনো তথ্য পরিবর্তন হয়ে থাকে তার স্বপক্ষে আইনি কাগজপত্র সংযুক্ত করা আবশ্যক। আপনার পেশা শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং বৈবাহিক অবস্থা সংক্রান্ত 

তথ্যগুলোও সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে। সরকারি বেসরকারি বা অন্য কোনো পেশায় থাকলে তার সঠিক পদবি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা জরুরি। বৈবাহিক অবস্থার পরিবর্তন হলে বিবাহ বা তালাকের সনদ প্রস্তুত রাখুন। অনলাইন ফর্ম পূরণের সময় প্রতিটি ঘরের জন্য নির্দেশনা দেওয়া থাকে যা খুব মনোযোগ সহকারে পড়া উচিত। কোনো ঘর ফাঁকা রাখা উচিত নয় এবং  অপ্রাসঙ্গিক তথ্যের ঘরে প্রযোজ্য নয় লিখে দেওয়া ভালো। তাড়াহুড়ো করে ফর্ম পূরণ না করে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে তথ্য যাচাই করে পূরণ করা দরকার। চূড়ান্তভাবে ফর্মটি সাবমিট করার আগে পুরো ফর্মটির একটি প্রিন্ট আউট নিয়ে অভিজ্ঞ কারো দ্বারা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত।

পাসপোর্ট রি ইস্যুর জন্য খাম ও ফেরত ঠিকানা দিন

পাসপোর্ট রি ইস্যুর প্রক্রিয়ায় আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় কিছু আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে একটি ফেরত খাম বা ডেলিভারি খাম জমা দেওয়ার প্রথা রয়েছে। এই খামটি সাধারণত ডাকযোগে বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদনকারীর কাছে পাঠানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ফেরত খামে আবেদনকারীর বর্তমান এবং সম্পূর্ণ ঠিকানা স্পষ্টভাবে লেখা থাকতে হবে। ঠিকানার সাথে একটি সক্রিয় ফোন নম্বর উল্লেখ করা আবশ্যক যাতে ডাক বা কুরিয়ার কর্মীরা সহজে আপনার সাথে যোগাযোগ 

করতে পারে। খামটি যেন মজবুত হয় যাতে ভিতরের পাসপোর্টটি নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়। ফেরত খামে প্রয়োজনীয় ডাকটিকিট সংযুক্ত করা উচিত যা ডাক বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত। তবে বর্তমানে অনেক পাসপোর্ট অফিস কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট বিতরণ করে সেক্ষেত্রে তাদের নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত। পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের নিয়ম অনুযায়ী যদি আপনি দ্রুততম সময়ে আপনার পাসপোর্টটি হাতে পেতে চান এবং অফিসে পুনরায় 

যেতে না চান তবে ফেরত খামের ব্যবস্থা রাখা একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। এই বিষয়টি আপনার এলাকার পাসপোর্ট অফিসের নিয়ম অনুযায়ী যাচাই করে নিতে হবে। এই খামটিকে আপনার অন্যান্য নথিপত্রের সাথে ভালোভাবে পিন করে জমা দেওয়া উচিত। খাম প্রস্তুত করার এই ছোট কাজটি আপনার পাসপোর্ট বিতরণের প্রক্রিয়াকে অনেক বেশি সুবিধাজনক করে তোলে।

পাসপোর্ট রি ইস্যুর জন্য অনুপস্থিত হলে প্রতিনিধি পাঠান

পাসপোর্ট রি ইস্যুর প্রক্রিয়া দুটি প্রধান ধাপে আবেদনকারীর ব্যক্তিগত উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান (ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট) এবং কিছু ক্ষেত্রে ডকুমেন্ট যাচাইকরণ। তবে অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ যেমন কাগজপত্র জমা দেওয়া বা পাসপোর্ট সংগ্রহের ক্ষেত্রে কিছু পরিস্থিতিতে প্রতিনিধি পাঠানো যেতে পারে। যদি আপনি কোনো অনিবার্য ব্যক্তিগত কারণে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার দিন অফিসে উপস্থিত হতে না পারেন তবে আপনার প্রতিনিধিকে আপনার পক্ষে পাসপোর্ট সংগ্রহের 

অনুমতি দেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রতিনিধিকে অবশ্যই আপনার লিখিত অনুমতিপত্র বা অথরিটি লেটার নিয়ে যেতে হবে। এই পত্রে প্রতিনিধির নাম এবং পরিচয় স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকা চাই। প্রতিনিধিকে আবেদনকারীর ডেলিভারি স্লিপ বা টোকেন ফি জমার মূল রশিদ এবং আবেদনকারীর পুরোনো পাসপোর্ট সাথে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া প্রতিনিধির নিজস্ব জাতীয় পরিচয়পত্রও যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজন হতে পারে। তবে একটি বিষয় খুব কঠোরভাবে মনে রাখা উচিত পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম 

পূরণের সকল নিয়ম অনুযায়ী বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের দিন আবেদনকারীর সশরীরে উপস্থিতি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। নিরাপত্তার স্বার্থে এই নিয়মটি অত্যন্ত কঠোরভাবে পালন করা হয়। কাগজপত্র জমা দেওয়া বা সংগ্রহের জন্য প্রতিনিধি পাঠানোর আগে পাসপোর্ট অফিসের সাথে যোগাযোগ করে তাদের নির্দিষ্ট নিয়মাবলী সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। এটি আপনাকে আইনি জটিলতা বা ভুল বোঝাবুঝির হাত থেকে রক্ষা করবে।

পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে পুলিশ রিপোর্ট দিন

যদি আপনার বর্তমান পাসপোর্টটি দুর্ভাগ্যজনকভাবে হারিয়ে যায় বা চুরি হয়ে যায় তবে রি ইস্যুর আবেদন করার আগে একটি অপরিহার্য আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। এই প্রক্রিয়াটি হলো স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করা। জিডি ছাড়া হারানো পাসপোর্টের রি ইস্যু আবেদন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। থানায় জিডি করার সময় আপনাকে পাসপোর্টের নম্বর ইস্যু তারিখ এবং পাসপোর্ট হারানোর বা চুরি হওয়ার স্থান ও সময় সহ সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করতে হবে। এই জিডি বা 

পুলিশ রিপোর্টের একটি সত্যায়িত কপি আপনার রি ইস্যু আবেদনপত্রের সাথে বাধ্যতামূলকভাবে সংযুক্ত করতে হবে। পুলিশ রিপোর্ট নিশ্চিত করে যে আপনার পাসপোর্টটি কোনো ভুল বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত হয়নি। হারানো পাসপোর্টের জন্য পাসপোর্ট গুলো রি ইস্যু ফরম পূরণের সকল নিয়ম তুলনামূলকভাবে কঠোর কারণ এতে নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত থাকে। জিডি কপি এই প্রক্রিয়ার প্রথম আইনি প্রমাণ। হারিয়ে যাওয়া পাসপোর্টের ক্ষেত্রে রি ইস্যু প্রক্রিয়া স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি সময় নিতে পারে কারণ কর্তৃপক্ষকে 

অতিরিক্ত যাচাই এবং তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। এই বাড়তি সময়ের জন্য আবেদনকারীকে প্রস্তুত থাকতে হবে এবং ধৈর্য ধারণ করতে হবে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে আবেদনপত্রে সমস্ত তথ্য সততার সাথে এবং নির্ভুলভাবে প্রকাশ করা উচিত। কোনো তথ্য গোপন করার চেষ্টা করা বা ভুল তথ্য দেওয়া আইনি জটিলতা এবং আপনার আবেদন বাতিলের কারণ হতে পারে।

আবেদনকারীকে যাচাইয়ের সময় উপস্থিত থাকতে হবে

পাসপোর্ট রি ইস্যুর আবেদন প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীর সশরীরে উপস্থিতি এবং যাচাইকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আবেদনকারীকে সাধারণত ডকুমেন্ট জমা বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান এবং প্রয়োজন অনুসারে যেকোনো অতিরিক্ত যাচাইয়ের জন্য উপস্থিত থাকতে হয়। আবেদন জমা দেওয়ার পর পুলিশ ভেরিফিকেশন একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া যেখানে আপনার দেওয়া ঠিকানার সত্যতা যাচাই করা হয়। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারাও আবেদনকারীকে অতিরিক্ত সাক্ষাতকার বা 

যাচাইয়ের জন্য ডাকতে পারেন বিশেষ করে তথ্যে কোনো অসামঞ্জস্য থাকলে। যাচাইয়ের সময় আবেদনকারীকে তার সকল মূল নথি এবং সহায়ক কাগজপত্র উপস্থাপন করতে প্রস্তুত থাকতে হবে। কর্মকর্তারা আপনার দেওয়া অনলাইন তথ্যের সাথে মূল নথির সম্পূর্ণ মিল খুঁজে দেখবেন। এই যাচাই প্রক্রিয়াটি নিরাপত্তার জন্য খুবই দরকারি। সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়েছে এবং কোনো প্রকার জালিয়াতির সুযোগ নেই। এই প্রক্রিয়াটি আপনার আবেদনকে দ্রুত এবং সফলভাবে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। যাচাই প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হলে আপনি আপনার নতুন পাসপোর্টটি হাতে পাওয়ার আরও এক ধাপ কাছে চলে যাবেন। আপনার সততা এবং সহযোগিতা প্রক্রিয়াটিকে সহজ করবে।

পাসপোর্ট-রি-ইস্যু-ফরম-পূরণের-সকল-নিয়ম

শেষকথাঃ পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের সকল নিয়ম

পাসপোর্ট রি ইস্যুর পুরো প্রক্রিয়াটি প্রথম দিকে কিছুটা চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে তবে ধাপে ধাপে এবং মনোযোগ সহকারে কাজ করলে এটি খুব সহজেই সম্পন্ন করা যায়। নির্ভুল তথ্য প্রদান সঠিক সময়ে ফি জমা দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র তৈরি রাখা এই প্রক্রিয়ার মূল চাবিকাঠি। আমরা যে পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম পূরণের নিয়ম আলোচনা করলাম তা সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনার আবেদন সফল হবেই। আধুনিক প্রযুক্তি যেমন অনলাইন আবেদন এবং ই-পাসপোর্টের ব্যবহার প্রক্রিয়াটিকে আরও দ্রুত এবং সুরক্ষিত করেছে। তাই এই সুবিধাগুলো গ্রহণ করা উচিত। সবশেষে মনে রাখবেন সঠিক নিয়ম মেনে আবেদন করাই হলো দ্রুত পাসপোর্ট পাওয়ার প্রধান উপায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডেইলি মিক্স24 এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url